মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম বড় বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি এশিয়ার অনেক দেশ সফরে যাচ্ছেন। এই সফর শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, এশিয়ায় আমেরিকার নতুন কৌশলগত উপস্থিতির লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই সফরে ট্রাম্প মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হল এই সফরে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যার দিকে গোটা বিশ্বের চোখ স্থির।
ট্রাম্প মালয়েশিয়া থেকে সফর শুরু করতে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন। এটি সেই একই প্ল্যাটফর্ম যা থেকে ট্রাম্প তার আগের মেয়াদে দূরত্ব বজায় রাখতেন, কিন্তু এবার তিনি এটিকে তার পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকারে পরিণত করেছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঘোষণা করেছেন যে দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এর পাশাপাশি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তির উদ্যোগেও ভূমিকা রাখতে চলেছেন ট্রাম্প। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম বলছে, ট্রাম্পের শান্তিপ্রিয় ভাবমূর্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এটি একটি প্রচেষ্টা, যা তাকে ভবিষ্যতে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দৌড়ে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
জাপানে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক হবে
মালয়েশিয়ার পর ট্রাম্প জাপানে পৌঁছাবেন, যেখানে তিনি দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী সানে তাকাইচির সঙ্গে দেখা করবেন। তাকাইচি হচ্ছেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং তার নিয়োগকে জাপানের রাজনীতিতে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। উভয় নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং জ্বালানি নিরাপত্তার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় জাপান রাশিয়ার শক্তি আমদানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষায় আরও অবদান রাখুক। জাপান ও আমেরিকার মধ্যে এই সংলাপকে এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প-শি বৈঠক প্রত্যাশিত
ট্রাম্পের সফরের তৃতীয় এবং সবচেয়ে আলোচিত স্টপ হতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়া, যেখানে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (APEC) সম্মেলনে অংশ নেবেন। এখানেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে আলোচনা চলছে। যদি এই বৈঠকটি হয় তবে এটি মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ শান্ত করার জন্য একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে বিবেচিত হবে। ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি শি জিনপিংয়ের সাথে গঠনমূলক আলোচনার জন্য উন্মুখ এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে চীন চাইলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করতে পারে। তবে, হোয়াইট হাউসও স্পষ্ট করেছে যে বৈঠকটি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, যা দেখায় যে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি।
উত্তর কোরিয়ার মিসাইল চ্যালেঞ্জ এবং ট্রাম্পের প্রতি শ্রদ্ধা
ট্রাম্পের সফরের ঠিক আগে উত্তর কোরিয়া নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, যা আবার নিরাপত্তার পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছে। তা সত্ত্বেও, দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা ট্রাম্পকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান গ্র্যান্ড অর্ডার অফ মুগুংওয়া প্রদানের কথা বিবেচনা করছে। ট্রাম্প এই সফরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন, যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও পড়ুন: অসীম মুনিরের হুমকি: ‘তুমি যদি মানুষ হও তাহলে…’, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসীম মুনিরের হুমকি





