রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট ও লুকোয়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলি “প্রতিউৎপাদনশীল” হবে এবং রাশিয়ার চেয়ে বিশ্ব অর্থনীতির বেশি ক্ষতি করবে।
রাশিয়ার হুঁশিয়ারি- ‘নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর হবে’
জাখারোভা বলেছেন যে আমেরিকার এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ রাশিয়াকে তার জাতীয় স্বার্থের সাথে আপস করতে বাধ্য করতে পারবে না। তিনি বলেছিলেন যে রাশিয়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে এই কথোপকথন মিডিয়ার বক্তৃতার পরিবর্তে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘এই পদক্ষেপটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এবং ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানের জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনার সম্ভাবনাকে আরও কঠিন করে তুলবে।’ জাখারোভা আরও বলেন যে রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং দেশটি আস্থার সাথে তার অর্থনৈতিক ও শক্তির সম্ভাবনার বিকাশ অব্যাহত রাখবে।
আমেরিকাকেও পরামর্শ দেয় চীন
বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে চীন। বেইজিং বলেছে, এগুলো ‘একতরফা পদক্ষেপ যার কোনো আন্তর্জাতিক আইনি ভিত্তি নেই।’ আমেরিকাকে চাপ বা জবরদস্তির নীতির পরিবর্তে আলোচনার পথ অবলম্বন করতে বলেছে চীন। চীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেছে, যা রাশিয়াকে সাহায্য করার অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু চীনা কোম্পানির উপর আরোপ করা হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও বলেছেন, ‘চীন ইউক্রেন সংকটের স্রষ্টাও নয়, তার সমর্থকও নয়। আমরা এমন সব পদক্ষেপের বিরোধিতা করি যা চীনা কোম্পানিগুলোর বৈধ স্বার্থের ক্ষতি করে।
রাশিয়া ও চীনের এই যৌথ প্রতিক্রিয়া আমেরিকার ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে শক্তিশালী ফ্রন্ট তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উভয় দেশ ইতিমধ্যেই ডলারের উপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিকল্প বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া ও চীন একসঙ্গে জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার করলে তা পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যেও পরিবর্তন দেখতে পারে।




